মধুটিলা ইকোপার্ক নালিতাবাড়ী, শেরপুর |

 মধুটিলা ইকোপার্ক


 

পাহাড়ের চূড়ায় সাইট ভিউ টাওয়ারে উঠলেই চোখ জুড়িয়ে যায় সীমান্ত পেরিয়ে উঁচু উঁচু পাহাড় আর সবুজ অরণ্যের মনোরম দৃশ্য দেখে। দূরের অরণ্যকে একটু কুয়াশাচ্ছন্ন মনে হলেও এর সৌন্দর্যের কোনো কমতি নেই। গারো পাহাড়ের আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পথ পেরিয়ে যত দূর এগোনো যায়, ততই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমারোহ।


মধুটিলা ইকোপার্ক কিভাবে যাবেন ?

ঢাকা থেকে মধুটিলা ইকোপার্কের দূরত্ব প্রায় 200 কিলোমিটার। ঢাকা থেকে সরাসরি Bike পাইভেট কার, মাক্রোবাস, মিনিবাস ও বড় বাস নিয়ে যেতে পারেন পর্যটন কেন্দ্র মধুটিলা ইকোপার্কে। ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাসরি নালিতাবাড়ী পর্যন্ত গেটলক সার্ভিস রয়েছে। জনপ্রতি ভাড়া 400 থেকে 450 টাকা। নালিতাবাড়ী থেকে অটোরিকশা, মোটরসাইকেলে 20-25 মিনিটে মধুটিলায় যাওয়া যায়।


খরচ

মধুটিলা ইকোপার্কে প্রবেশ টিকেটের মূল্য জনপ্রতি 50 টাকা। ওয়াচ টাওয়ারে উঠার ফি জনপ্রতি 10 টাকা। বিভিন্ন রাইডের টিকেট মূল্য 20-40 টাকা।


কি কি দেখবেন?

পার্কের গেট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই নজরে পড়বে উঁচু গাছের সারি। রাস্তা থেকে ডান পাশে খোলা প্রান্তর আর দুই পাশে রকমারি পণ্যের দোকান। রেস্তোরাঁ পেরোলে পাহাড়ি ঢালুর আঁকাবাঁকা রাস্তা। পাহাড়ের প্রবেশপথেই অভ্যর্থনা জানাবে ধূসর রঙের বিশাল আকৃতির শুঁড় উঁচানো পাথরের তৈরি দুটি হাতি।

এরপর যত এগোনো যাবে, ততই মন ভরে যাবে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে। পথে বুনো গাছপালার ফাঁকে ফুটে আছে হরেক রকমের বুনোফুল, তাতে বাহারি প্রজাপতির ওড়াউড়ি। এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যাওয়ার পথে ঝোপঝাড়ে দেখা মিলবে হরিণ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংহ, বানর, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, হ্রদের ধারে কুমির, ব্যাঙ আর মৎস্যকন্যার অতি চমৎকার সব ভাস্কর্য। আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পথে ঘন ঘন গাছের সারি গভীর অরণ্যের দিকে চলে গেছে। এখানে উঁচু পাহাড়ের গাছের ছায়ায় বসে কাটানো যাবে দুপুর ও বিকেল।

ইকোপার্কে আলাদা ফি দিয়ে হ্রদে প্যাডেল বোট চালিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ। ওয়াচ টাওয়ারে উঠে ভারতে অবস্থিত উঁচু উঁচু পাহাড় আর সীমান্তবর্তী সবুজ গারো পাহাড় দেখতে পাবেন। ভাগ্য ভালো হলে ওয়াচ টাওয়ার থেকেই মিলতে পারে বুনোহাতির দলের দেখা। তারা সাধারণত শেষ বিকেলে অথবা সন্ধ্যায় গভীর অরণ্য থেকে নেমে আসে।

বিভিন্ন রাইড নিয়ে সম্পূর্ণ আলাদা করে গড়ে তোলা হয়েছে শিশুদের খেলাধুলা ও বিনোদনের জন্য শিশুপার্ক। এখানে ভ্রমণপ্রিয়দের দিনের বেলায় ব্যবহারের জন্য রয়েছে পাহাড়ের চূড়ায় মহুয়া রেস্টহাউস। এটি ব্যবহার করতে চাইলে ময়মনসিংহ অথবা শেরপুর বন বিভাগের অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া এখানে রয়েছে ডিসপ্লে মডেল, তথ্যকেন্দ্র, গাড়ি পার্কিং জোন, ক্যানটিন, মিনি চিড়িয়াখানা। ঔষধি ও সৌন্দর্যবর্ধক প্রজাতির বৃক্ষ, মৌসুমি ফুলসহ বিভিন্ন রঙের গোলাপের বাগান। রয়েছে বেশ কয়েকটি পিকনিক স্পটও। পার্কটিতে জীববৈচিত্র্য ও প্রাণীর সমাহারও চোখে পড়বে।

কোথায় খাবেন

স্পট এলাকার দোকানগুলোতে মিনারেল ওয়াটার, ড্রিংকস, চা-কফিসহ স্টেশনারি, খাবার সবই পাবেন। মধুটিলা ইকোপার্ক এর সামনে দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়ার জন্য স্থানীয় হোটেলে সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়।


কিছু কথা

ঢাকা থেকে দিনে এসে দিনেই ফিরে যাওয়া যায়। আর কোনো কিছু কেনার আগে দর-দাম করে নিবেন। আপনার যাত্রা শুভ হোক।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ